শ্বসন
PDF ডাউনলোড করতে নীচে ক্লিক করো :
শ্বসন Part -01
শ্বসন Part -02
শ্বসন Part -03
শ্বসন Part -04
শ্বসন[PART-I]
অঙ্গস্তরে শ্বসন (Organ-level Respiration)
শ্বসন প্রতিটি সজীব কোশে দিবারাত্র সম্পন্ন হয়
শ্বসনক্রিয়ার সময় অক্সিজেন গ্যাস গৃহীত হয় ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড গ্যাস নির্গত হয়
সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় সৌরশক্তি খাদ্যের মধ্যে স্থৈতিক শক্তিরূপে আবদ্ধ হয়
শ্বসনকালে স্থৈতিক শক্তি গতি বা তাপ শক্তিরূপে মুক্ত হয়
শ্বসন একটি অপচিতিমূলক বিপাক ক্রিয়া
শ্বসন একটি তাপমোচী প্রক্রিয়া
শ্বসন অঙ্গাণু হল মাইটোকনড্রিয়া
মাইটোকন্ড্রিয়াকে কোশের শক্তিঘর বলে
ব্যাকটেরিয়ার মাইটোকনড্রিয়ার পরিবর্তে মেসোজোম শ্বসন ক্রিয়া সম্পন্ন করে
শ্বসন বস্তু গ্লুকোজ (C6H12O6)
রেসপিরোমিটারের সাহায্যে শ্বসন হার ও RQ-এর মান মাপা যায়
RQ-এর পুরো নাম-রেসপিরেটরি কোসেন্ট
30°C উষ্ণতায় শ্বসনের হার সব থেকে ভালো হয়
একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের শ্বসনের হার 14-18 বার/মিনিটে
উদ্ভিদের শ্বাসস্থান
পত্ররন্দ্র (Stomata):
বিষমপৃষ্ঠ পাতার নিম্নত্বকে এবং সমাঙ্কপৃষ্ঠ পাতার উভয় ত্বকে পত্ররন্ধ্র থাকে
পত্ররন্ধ্র দুটি অর্ধচন্দ্রাকৃতি জীবিত রক্ষীকোশ দ্বারা বেষ্টিত একটি রন্ধ্র নিয়ে গঠিত
পত্ররন্দ্রের মাধ্যমে গ্যাসীয় আদানপ্রদান ঘটে
লেন্টিসেল (Lenticell):
গুল্ম ও বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদের বায়ব অংশে বিশেষ করে ত্বকের বিদীর্ণ অংশে একপ্রকার ছোটো ছোটো ছিদ্র দেখা যায়, তাদের লেন্টিসেল বলে
লেন্টিসেল উদ্ভিদের গ্যাসীয় আদানপ্রদান ঘটায়
শ্বাসমূল ছিদ্র (Pneumatophore):
সুন্দরী, গরান, গেঁও প্রভৃতি লবণাম্বু উদ্ভিদের শ্বাসমূল থাকে।
শ্বাসমূলে শ্বাসছিদ্র থাকে
শ্বাসছিদ্রের মাধ্যমে গ্যাসীয় আদানপ্রদান ঘটায়
প্রাণীদের শ্বাসঅঙ্গ
দেহতল (Body surface): অ্যামিবা, প্যারামিসিয়াম, হাইড্রা, স্পঞ্জ
শ্বাসনালি (Spiracle and Trachea): পতঙ্গ শ্রেণির প্রাণীদের (ফড়িং, আরশোলা)
ফুলকা (Gills): জলজ প্রাণী (রুই, কাতলা, চিংড়ি, শামুক)
চিংড়ি, কাঁকড়ার ফুলকাকে বুকগিল বলে
ফুলকা রক্তজালক পূর্ণ হওয়ায় ব্যাপন প্রক্রিয়ায় গ্যাসীয় আদানপ্রদান ঘটে
অতিরিক্ত শ্বাসযন্ত্র: জিয়ল মাছ (কই, শিঙি, মাগুর)
ফুসফুস (Lung): উন্নত শ্রেণির প্রাণী (উভচর, পক্ষী, সরীসৃপ, মানুষ)
বিভিন্ন প্রাণীর শ্বাস অঙ্গের নাম
ফিতাকৃমি অন্তঃপরজীবী হওয়ায় অক্সিজেন বিহীন শ্বাসকার্য চালাতে পারে
মনেসিস্টিস নামক প্রাণী ও ইস্ট নামক উদ্ভিদ বায়ুশূন্য স্থানে বাঁচতে পারে
মোলাস্কা পর্বের অন্তর্ভুক্ত স্থলজ প্রাণী শামুক ফুলকার সাহায্যে শ্বাসকার্য চালাতে পারে
হাইবারনেশন - ব্যাঙের শীতঘুম-চামড়া ও মুখবিবহেরর সাহায্যে ব্যাঙ শ্বাসকার্য করে
পায়রার ক্ষেত্রে ফুসফুস ছাড়াও অতিরিক্ত নয়টি বায়ুথলি দেখতে পাওয়া যায়
শ্বসন[PART-II]
অঙ্গস্তরে শ্বসন (Organ-level Respiration)
ফুসফুস ও মানবদেহের শ্বাসপ্রক্রিয়া
ফুসফুস (Lungs)
ডান ফুসফুস বাম ফুসফুস অপেক্ষা কিছুটা বড়ো
প্লুরা (plura) নামক দ্বিস্তরবিশিষ্ট আবরণ দ্বারা ফুসফুস আবৃত থাকে (এর ভিতরের স্তর ভিসেরাল স্তর এবং বাইরের স্তর প্যারাইটাল স্তর)
ফুসফুসে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বায়ুথলি (alveoli) (প্রায় সাড়ে ত্রিশ কোটি) বর্তমান
ফুসফুসের মোট বায়ুধারণ ক্ষমতা (Total Lung Capacity or TLC) 5-6 L
স্পাইরোমিটার যন্ত্রের সাহায্যে ফুসফুসীয় বায়ুর পরিমাণ মাপা হয়
কলাকোশের রক্তে CO2 ঘনত্ব বৃদ্ধি পেলে অক্সিহিমোগ্লোবিন ভেঙ্গে O2 মুক্ত হয়। একে বোর প্রভাব বলে
ফুসফুসের রক্তে O2 ঘনত্ব বৃদ্ধি পেলে কার্বামিনো হিমোগ্লোবিন ভেঙ্গে CO2মুক্ত হয়। একে হ্যালডেন প্রভাব বলে
রক্তে O2এর পরিমান হ্রাস পাওয়াকে হাইপোক্সিয়া বলে
স্বাভাবিক অবস্থায় কোনো ব্যাক্তির মিনিটে 16-18 বার শ্বাসচক্র সম্পন্ন হয়
মানুষের বায়ু থলির বাতাসে CO2 এর পরিমান 5%
ফুসফুসের শ্বাসবায়ুর আদান-প্রদান ঘটে অ্যালভিওলাই এর মাধ্যমে
শ্বাসপেশি (Respiratory muscles)
পঞ্জরাস্থিমধ্যস্থ পেশি (intercostal muscles) এবং মধ্যচ্ছদা বা ডায়াফ্রাম (diaphragm)
মানুষের বক্ষপিঞ্জরে 12 জোড়া পাঞ্জরাস্থি আছে
মানুষের শ্বসন কৌশল
প্রশ্বাস বা শ্বাসগ্রহণ (Inspiration)
নিশ্বাস বা শ্বাসত্যাগ (Expiration)
বিভিন্নপ্রকার শ্বাসরঞ্জক
পলিকিট প্রানীর রক্তকনিকায় হিমোএরিথ্রিন নামক শ্বাসরঞ্জক থাকে
শ্বসন[PART-III]
কোশীয় শ্বসন (Cellular Respiration)
শ্বসনের বিক্রিয়াগুলি কোশের সাইটোপ্লাজমে এবং কোশ-অঙ্গাণু মাইটোকন্ড্রিয়ার মধ্যে সম্পন্ন হয়।
কোশের মধ্যে কোশস্থ খাদ্য গ্লুকোজের দহন বা জারণ ঘটে, যা বিভিন্ন উৎসেচকের ক্রিয়ায় অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বা অনুপস্থিতিতে ঘটে থাকে।
কোশীয় বস্তুর জারণ ঘটে শক্তি উৎপন্ন হওয়াকেই কোশীয় শ্বসন বলে।
কোশীয় শ্বসনের প্রকার
সবাত শ্বসন (Aerobic Respiration)
যে শ্বসন পদ্ধতিতে মুক্ত অক্সিজেনের উপস্থিতিতে বায়ুজীবী জীবকোশ-মধ্যস্থ শ্বসন বস্তু (গ্লুকোজ) সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জল উৎপন্ন করে এবং শ্বসন বস্তু-মধ্যস্থ শক্তি সম্পূর্ণরূপে নির্গত (686 kcal) হয়, তাকে সবাত শ্বসন বলে।
C6H12O6+6O2 উৎসেচক 6CO2+6H2O+ 686 kcal (শক্তি)
সবাত শ্বসন প্রক্রিয়াটি তিনটি পর্যায়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়, যথা-
(i) গ্লাইকোলাইসিস, অর্থাৎ গ্লুকোজ অণুর পাইরুভিক অ্যাসিডে পরিণত হওয়া
(ii) ক্রেবস চক্র, অর্থাৎ পাইরুভিক অ্যাসিডের পরবর্তী জারণে CO₂, জল এবং শক্তি উৎপন্ন হওয়া।
(iii) প্রান্তীয় শ্বসন, অর্থাৎ গ্লাইকোলাইসিস ও ক্রেবস চক্রে উৎপন্ন বিজারিত হাইড্রোজেন গ্রাহকগুলি মুক্ত আণবিক অক্সিজেন দ্বারা সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে জল ও শক্তির সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া।
1 গ্রাম-অণু গ্লুকোজ সম্পূর্ণরূপে জারিত হলে প্রায় 686 kcal (কিলোক্যালোরি) তাপশক্তি উৎপন্ন হয়
অবাত শ্বসন (Anaerobic Respiration)
যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় অবায়ুজীবী জীবকোশে, মুক্ত অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে কোশস্থ খাদ্য বা শ্বসন বস্তু (গ্লুকোজ) অক্সিজেনযুক্ত যৌগের (NO3, CO3, SO3) অক্সিজেন দ্বারা অসম্পূর্ণভাবে জারিত হয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড, জল ও শক্তি উৎপন্ন করে, তাকে অবাত শ্বসন বলে।
সালফার ব্যাকটেরিয়া, মিথেন ব্যাকটেরিয়া, ডিনাইট্রিফাইং ব্যাকটেরিয়াতে অবাত শ্বসন দেখা যায়
অবাত শ্বসন প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ নাইট্রেট যৌগের অক্সিজেন কর্তৃক আংশিক জারিত হয়ে 50 kcal শক্তি, জল এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড উৎপন্ন করে
C6H12O6+12NO2 উৎসেচক 6CO2+6H2O+12NO2 (নাইট্রেট)+ 50 kcal (শক্তি)
সন্ধান (Fermentation)
যে শ্বসন প্রক্রিয়ায় শ্বসন বস্তু (গ্লুকোজ) অক্সিজেনের অনুপস্থিতিতে ব্যাকটেরিয়া, ইস্ট জাতীয় ছত্রাকের দেহকোশ নিঃসৃত উৎসেচকের প্রভাবে আংশিকভাবে জারিত হয়ে বিভিন্ন জৈব যৌগ উৎপন্ন হয়ে কোশের বাইরে সঞ্চিত হয় এবং শ্বসন বস্তুস্থিত শক্তির আংশিক নির্গমন ঘটে, তাকে সন্ধান বলে
সন্ধান একপ্রকার অবাত শ্বসন প্রক্রিয়া
ইস্ট নামক এককোশী ছত্রাকের মধ্যে বিজ্ঞানী পাস্তুর সন্ধান প্রক্রিয়াটি পর্যবেক্ষণ করেন
কতিপয় বায়ুজীবী ও অবায়ুজীবী আণুবীক্ষণিক জীবের দ্বারা সন্ধান প্রক্রিয়া ঘটে
সরল শর্করা দ্রবণে প্রধানত ইস্ট দ্বারা এবং দুধে ল্যাক্টোব্যাসিলাস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সন্ধান প্রক্রিয়া ঘটে
উদ্ভিদের অঙ্কুরিত বীজে, প্রাণীদেহের পেশিকোশে এবং আণুবীক্ষণিক জীবদেহেও সন্ধান চলে
সন্ধানের অর্থনৈতিক গুরুত্ব - অ্যালকোহল বা সুরা প্রস্তুতিতে; দই, ভিনিগার প্রস্তুতিতে;পাউরুটি ও বিস্কুট কারখানায়
অক্সিজেনের উপস্থিতিতে সন্ধান পদ্ধতি বন্ধ হওয়াকে পাস্তুর প্রভাব (Pasteur effect) বলে
.jpeg)
Comments
Post a Comment